ফাল্গুন নিয়ে কবিতা | ১লা ফাল্গুনের প্রেমের কবিতা | পহেলা ফাল্গুনের শুভেচ্ছা কবিতা
ফাল্গুন নিয়ে কবিতা | ১লা ফাল্গুনের প্রেমের কবিতা | পহেলা ফাল্গুনের ভালোবাসার কবিতা

ফাল্গুন নিয়ে কবিতা | ১লা ফাল্গুনের প্রেমের কবিতা | পহেলা ফাল্গুনের শুভেচ্ছা কবিতা: মাঘ মাসের হাড় কাঁপানো শীতের পর আজ বাংলায় আবির্ভাব হল ফাল্গুনের, আজ পহেলা ফাল্গুন ১৪২৯। বাংলা ক্যালেন্ডারে সর্বশেষ মাস এই ফাগুন। যে ফাল্গুন মাসের জন্য অপেক্ষায় থাকে প্রতিটি বাঙালি হৃদয়। কেননা ফাল্গুন মাসেই আমাদের মাঝে আসে ঋতুরাজ বসন্ত। যে বসন্তকালের স্পর্শ পেয়ে প্রকৃতি পুনরায় জেগে ওঠে তার নতুন উদ্যমে। কেননা শীতকালে প্রতিটি গাছের পাতা ঝরে এতে করে প্রকৃতি হয়ে যায় জরাজীর্ণ। এই জরাজীর্ণ প্রকৃতি প্রাণ ফিরে পায় ফাল্গুনে, তখন ফাল্গুনের রঙে বসন্তের আগমনী ছোঁয়ায় সবকিছু বেড়ে ওঠে নতুনভাবে। তাইতো প্রতিটি বাঙালি বরণ করে নেয় ফাল্গুনকে, আয়োজন করে বসন্ত উৎসবের। ফাল্গুনে আপনাদের সকলের বসন্তের উৎসবকে পূর্ণমাত্রায় ফোটাতে আমরা উপস্থিত হয়ে ফাল্গুনের কবিতা নিয়ে। যেখানে আপনারা পাবেন ফাল্গুন নিয়ে কবিতা, পহেলা ফাল্গুনী প্রেমের কবিতা, বসন্ত নিয়ে প্রেমে ও ভালোবাসার কবিতা, পহেলা ফাল্গুনের শুভেচ্ছা কবিতা।
Table of content...
ফাল্গুন নিয়ে কবিতা ২০২৩
আজ ফাল্গুন মাসের ১ তারিখ অর্থাৎ পহেলা ফাল্গুন। বাংলায় এই মাসে আমাদের মাঝে এসে উপস্থিত হয়েছে ঋতুরাজ বসন্ত। যে বসন্তের কারণে প্রতিটা গাছে দেখা দিয়েছে নতুন পত্র পল্লবের, দেখা দিয়েছে অসংখ্য ফুলের। যে ফুল তার লাল, নীল। হলুদ রং ছড়িয়ে দিয়েছে প্রকৃতির মাঝে। ফাল্গুনের উৎসবে মেতেছে বসন্তের এই আয়োজনে। আর ফাল্গুনের উৎসবকে আরো নানা রঙ্গে ছড়িয়ে দিতে পারে ফাল্গুন নিয়ে কবিতায। কারণ ফাল্গুনের প্রথম প্রহরের আয়োজন করা হয় ফাল্গুনী কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান।
আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে।
তব অবগুণ্ঠিত কুণ্ঠিত জীবনে
কোরো না বিড়ম্বিত তারে।
আজি খুলিয়ো হৃদয়দল খুলিয়ো,
আজি ভুলিয়ো আপনপর ভুলিয়ো,
এই সংগীত-মুখরিত গগনে
তব গন্ধ তরঙ্গিয়া তুলিয়ো।
এই বাহির ভুবনে দিশা হারায়ে
দিয়ো ছড়ায়ে মাধুরী ভারে ভারে।
অতি নিবিড় বেদনা বনমাঝে রে
আজি পল্লবে পল্লবে বাজে রে–
দূরে গগনে কাহার পথ চাহিয়া
আজি ব্যাকুল বসুন্ধরা সাজে রে।
মোর পরানে দখিন বায়ু লাগিছে,
কারে দ্বারে দ্বারে কর হানি মাগিছে,
এই সৌরভবিহ্বল রজনী
কার চরণে ধরণীতলে জাগিছে।
ওগো সুন্দর, বল্লভ, কান্ত,
তব গম্ভীর আহ্বান কারে।
ফাল্গুনের কবিতা ১৪২৯
বাংলা ক্যালেন্ডারে সর্বশেষ মাস ফাল্গুন এখন আমাদের মাঝে বিরাজ করছে, আজ ১লা ফাল্গুন ১৪২৯। ফাল্গুন মাসটি অন্যান্য সকল মাসের চাইতে সকলের কাছে প্রিয়। কারণ ফাল্গুনে ফুটে নানা রঙের ফুল প্রকৃতির মাঝে বিরাজ করে অসাধারণ এক সৌন্দর্য। মানুষ পরে প্রেমে দেখে ভালোবাসা স্বপ্ন, যে ভালোবাসা পূর্ণতা পায় ফাল্গুনের কবিতায়। প্রিয়জনের কাছে ফাল্গুনের কবিতা হতে পারে বসন্তে প্রেমের নতুন দীপ্ত ছোঁয়া।
ফাগুনের প্রেম
রুক্ষ শীতের শূন্যতা শেষ- প্রান ফিরেছে ধরায়,
অনুভূতির রঙ্গিন ফেরি সর্বাঙ্গে জড়ায়।
গুনগুনিয়ে ভ্রমর চলে, মৌমাছিও আছে,
সরিষা ক্ষেতে মধু পাবে, মুকুল আমের গাছে।
বউ কথা কও ডাকছে পাখি, কোকিল ধরে গান।
হিয়ায় আমার বিধলো বুঝি, মদন দেবের বান!
প্রানের সখার প্রতিক্ষাতে প্রহর বয়ে যায়
মন যে আমার হয় উদাসী; কি করিবো হায়!
কাজল কালো নেত্রযুগল, ওষ্ঠে রাখি হাসি
ভুলেছে সে কি শত প্রহর অপেক্ষাতে আছি?
কালচক্রের প্রহর বয়; চক্ষু আসে মুদে
প্রনয় বুঝি আর হোল না; ডুবি যেন ক্লেদে!
বাতায়নে বসে আছি সুর বাধি যে মনে,
সখার আশায় চেয়ে থাকি কুঞ্জ বনের পানে।
তানপুরাতে আঙ্গুল চলে সুরের ঐকতান,
দক্ষিণ হাওয়া উদাস করে, বেসুরো সব গান।
ফাগুন আমায় বিভোর করে, হারায় নিজেকে
শূন্য হিয়ার আড়ালে তবু হাসি জড়াই মুখে,
আক্ষেপ আমি এড়াতে নারি; দুপুর বিষন্ন
ফাগুন মানেই সুখ শুধু নয়- নির্জীব অপরাহ্ন।
বসন্ত যে এসে গেল, ফাগুনে মাতবে প্রিয়?
টিএসসিতে তুমি গেল, আমায় সঙ্গে নিও।
পড়ে এসো পাঞ্জাবিটা- হলুদ কিংবা নীল
শাড়ি আমি পড়বো রেখে তোমার সাথে মিল।
কিনে দিও গজরা ফুলের ; লাগিয়ে দিও চুলে
বই মেলাতেও হবে যেতে- যেওনা যেন ভুলে।
বিকেল বেলা বন্ধুরা সব আসবে পুকুর পাড়ে,
তখন তুমি গান ধরো এক, আমায় উদাস করে।
হাঁটতে হাঁটতে সাঝের বেলায় উদ্যানেতে যেও
লেকের জলে প্রতিবিম্ব ; আপন করে নিও।
চোখের তারায় ডুববো আমি, ঠাই পাবো না জানি
এলোমেলো ছন্দ সাজাও- মধুর প্রেমের বানি।
একটা দিন ইচ্ছে মতো ঘুরবো মনে রেখো
যান্ত্রিকতাও মুখ ফেরাবে- পাবেনা ছুতে দেখো
দুঃখগুলো পেছনে ফেলে পা বাড়াবো আগে-
আবার যেন ভুল করোনা; বেয়াড়া কিছু রাগে।
ফাগুন মানেই প্রেমের প্রতীক- নতুন করে শুরু
তোমার ছোঁয়ায় শ্রান্তি মেলে, হৃদকম্প দুরুদুরু
প্রেমের নামে নতুন করে হাতটা ধরো আবার
তুমি যে হও প্রানের সখা, কোথায় বলো যাবার
১লা ফাল্গুনের প্রেমের কবিতা
বাঙালি প্রতিটা হৃদয় প্রেমে পড়তে ভালোবাসে হোক সেটা প্রকৃতির অথবা প্রিয় মানুষের। প্রতিটি হৃদয়ের প্রেম জেগে ওঠে বসন্তের প্রথম প্রহরে ১লা ফাল্গুনে। কেননা পহেলা ফাল্গুন নিয়ে আসে বসন্ত বরণ উৎসব। ঠিক তেমনিভাবে এবারও বর্ষবরণের আগে এখন আমাদের মাঝে এসেছে ১লা ফাল্গুনের বসন্ত উৎসব। যা পালন করে হয়ে থাকে পহেলা ফাল্গুনের তথা বাংলা ফাল্গুন মাসের ১ তারিখে। এদিনটিতে বিশেষভাবে স্থান পায় ফাল্গুনের প্রেমের কবিতা, কারণ ফাগুনেই প্রেমে আগুন লাগে।
বসন্তের ধারা
প্রকৃতিতে সুর উঠেছে, ফাগুন এলো দ্বারে;
বরতে হবে বসন্তরে রাঙা পুষ্প হারে।
রাজপথ ছেয়ে আছে কৃষ্ণচূড়ার লালে,
চতুর্দিকে সুবাস ছড়ায় হরেক রকম ফুলে।
রুদ্র-পলাশ, স্বর্ন-শিমুল, পলাক-জুই এর সাথে;
রক্ত-কাঞ্চন, ক্যামেলিয়া, ইউক্যালিপটাসও আছে।
মহুয়া, অশোক, কুসুম, কুরচি সুগন্ধ ছড়ায়;
দেবদারু আর গামারি ফুলেও মুগ্ধতা মেলায়।
বৃক্ষ শাখে নব বৃন্ত- ঝরা পাতার শেষ;
গাছের শাখে রাঙ্গা পাতা দেখতে লাগে বেশ।
কাচা বরই ভর্তা খাওয়া ধনিয়া পাতার সাথে
দিনের বেলায় চড়ুইভাতি, গানের আসর রাতে।
কবিরা সব কাব্যে মাতে; চলে হাতের কারুকাজ,
ফাগুন মানেই অন্যরকম অকৃত্রিম এক সাজ।
আল্পনাতে চিত্র ফোটে- বসন্ত বরন
ইচ্ছে মতো তুলির আচড়; মেলেনা বারন।
বসন্ত নিয়ে প্রেমের কবিতা
মোট ছয়টি ঋতুর দেশ বাংলাদেশ যার মাঝে অন্যতম ঋতুরাজ বসন্ত। বসন্তে বইতে থাকে নতুন হাওয়া, বসন্তে ডাকে কোকিল বসন্তে প্রতিটি গাছে ফোটে নতুন পাতা আরও ফুটে ফুল। যার কারণেই বসন্তে প্রকৃতির মাঝে বিরাজ করে এক ধরনের প্রেম। যে প্রেমের রং ছড়িয়ে দিতে অনেকেই খুঁজে থাকে বসন্ত নিয়ে প্রেমের কবিতা, যা নিবেদন করা হয় প্রকৃতিকে বিশেষভাবে।
বসন্তবরণ
পলাশ শিমুল জোড় বেধেছে-
ফাগুন এলো ধরায়,
বউ কথা কও গান ধরেছে,
করছে সুরের বড়ায়।
হলুদ হিমুর বেশ ছেলেদের
নীলের রূপা নয়
রঙ বেরঙের বেশ রমনীর
ফুলও শোভা পাই।
শাড়ি সাজে বাঙালিয়ানা
পাঞ্জাবিতেও তাই,
ফাগুন মানেই প্রেমের যুগল
দারুন লাগে ভাই।
সাঝের বেলায় কবিতা চলে
গানের আসর রাতে,
ছেলেবুড়ো সবাই যেন
আনন্দতে মাতে।
উৎসব যেন গ্রাম নগরে
তবুও কোথায় যেন ছেদ,
শূন্য শীতের বিদায় বেলায়
মন খারাপের জেদ।
আরও দেখুন ♡ বসন্ত নিয়ে রোমান্টিক কবিতা
পহেলা ফাল্গুনের শুভেচ্ছা কবিতা
আমাদের মাঝে পহেলা ফাল্গুন এসেছে আর তার শুভেচ্ছা বার্তা ও বাণী সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিব না এমনটি হতে পারে না। তাইতো পহেলা ফাল্গুনের প্রথম লগ্নে ফাল্গুনের শুভেচ্ছা কবিতা দিয়ে শুরু করা হয় সকল ধরনের আয়োজন। যেখানে যোগ হয় বসন্ত বরণের উৎসবেরও। নিচের অংশ থেকে সংগ্রহ করে নিন পহেলা ফাল্গুনের শুভেচ্ছা কবিতা।
বসন্তরূপ
বসন্ত এলো যে ধরায়
উদাসি কোকিলের সুর মন ভরায়,
কৃষ্ণচূড়ায় রাজপথ সাজে
সঙ্গীতের কলতান কানে বাজে।
মদন দেবের আশীর্বাদ
আবির রাঙ্গা চারিপাশ,
বউ কথা কও পাখি ডাকে
ছেলে বুড়ে সব আনন্দে মাতে।
ভ্রমরায় দল বেধে চলে
ফুল ফোটে কাননে কাননে,
বৃক্ষে নতুন পত্র-পল্লব জাগে
সবকিছু অপরূপ লাগে।
শীতের আমেজ মুছে যায়
প্রকৃতির রঙ্গিন সজ্জায়,
এতসব নতুনের ভিড়ে
রুক্ষতা কাটে ধীরে ধীরে।
নজরুল-রবি বন্দনা করছে যায়
সকল অঞ্জলি এখনও শুধু যে তার
বসন্তকে করিতে বরন-
পথে-প্রান্তরে চলে মহারন।
বসন্তের ভালোবাসার কবিতা
বসন্তের আগমনে জেগে ওঠে ভালোবাসা, কেননা এই সময়টা চারিদিকে নানান রঙ্গের ফুলে ছেয়ে যায়। এতে করে প্রকৃতি সাজে তার অপরূপ সৌন্দর্যে। তখন মন প্রান ওদের দোলা দেয় বসন্তের নরম বাতাস এতে করেই বসন্তে ভালোবাসাটা জেগে ওঠে। বসন্তের ভালোবাসায় তৈরি হয় বসন্তের ভালোবাসার কবিতা।
বসন্তের অপেক্ষা
বসন্তের করাঘাত রিক্ত হিয়ার দ্বারে
কোকিলের সুর উদাসী করেছে মোরে,
সুরের ঐকতান কোথা হারালো
এমনি করে কতো বসন্ত পেরোলো।
অষ্টাদশী হৃদয়ে প্রনয়ের মনোভাব
বৃক্ষ শাখে পক্ষীর কলোরব,
মহুয়া মালতী রুদ্রপলাশ
তবো উপেক্ষায় হলেম হতাশ।
তবুও প্রতিক্ষার প্রহর হয় না শেষ-
বসন্তের সজ্জায় মিশে প্রনয়ের রেশ;
ভ্রমরা চেনাবে সখা পথ,
কুসুমিত কোমল পুষ্প রথ।
হৃদয় আঙ্গিনায় প্রজ্জ্বলিত আশার প্রদীপ,
বসন্ত তবো হিয়ায় জাগবে অন্তরীপ!
কন্টক নয় ফুলেল বান যে চাই
আপনাকে ভুলি আপনারই তরুছায়ায়।
ফাগুন হাওয়ায় হিল্লোল উঠে শাখে
সে নেত্রে কি মোর প্রতিচ্ছবি রাখে?
দেবদারু ফুল উড়ায় শঙ্খচিলে
প্রেমের পসরা লুটায় হেলায় পড়ে।
আরও দেখুন ♡ বসন্তের বিখ্যাত প্রেমের কবিতা